বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ  হন মো. রাকিবুল হোসেন (২৯)। রাকিব চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকতেন। কিন্তু গ্রামের বাড়িতে তার ঘরটা সবসময় এমনই সাজানো থাকতো তার অপেক্ষায়। পরিপাটি ঘরটি দেখে মনে হবে খানিক পরেই ফিরবে রাকিব। একটা বাড়িতে তিনজনের বসবাস। কিন্তু কোথাও যেন কেউ নেই। নেই কোনো শব্দ। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে যে ঝরে গেছে সহস্র নক্ষত্র। তেমনই এক নক্ষত্র মো. রাকিবুল হোসেন।

শহিদ রাকিবের বাবা আবু বকর সিদ্দিক অশ্রুরুদ্ধ কন্ঠে বাসসকে বলেন, ‘আন্দোলনের সময় আমরা রাকিবকে ফোন করলে সে লোকজনের ভিড় থেকে সরে গিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলত। সে যে আন্দোলনে অংশ নিয়েছে, এটা সে আমাদের বুঝতে দিতে চাইতো না। এসব কথা রাকিবুলের সহকর্মীরা পরে আমাদের জানিয়েছে।’

রাকিবের মা হাফিজা খাতুন বলেন, ১৯ জুলাই মিরপুর ১১ তে মেট্রোরেল লাইনের নিচে আন্দোলনকারীদের মাঝে আমার ছেলে পানি বিতরণ করছিল। শিক্ষার্থীদের মাঝে সে যতক্ষণ ছিল, ততক্ষণ নিরাপদেই ছিল। যখনই সে পানি বিতরণ শেষে শিক্ষার্থীদের থেকে কিছুটা আলাদা হয়ে যায়, তখনই তাকে টার্গেট করে গুলি করা হয়। আমার ছেলের সাথে থাকা সহকর্মীরা জানিয়েছে, ওপর থেকে গুলি এসে তার গলায় ঢুকে যায়। পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে আমার ছেলেটা মারা যায়।

শহিদ রাকিবের বাবা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘আমার ছেলের বন্ধু পিয়াস জানিয়েছে, সে সময় একজন বয়স্ক  মহিলা দৌড়ে রাস্তা পার হতে যেয়ে রাকিবের সামনে এসে পড়ে যায়। ওই সময় রাকিব তাকে টেনে তুলতে এগিয়ে গিয়েছিল। আর তখনই ওপর থেকে নিখুঁত টার্গেটে আমার ছেলেকে গুলি করা হয়।’

সূত্র- বাসস, ‘বাইকটা ছুঁলেই মনে হয় আমি রাকিবকে স্পর্শ করছি’ – শহিদ রাকিবের বাবা (Archived)