বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছেন শহিদ গউস উদ্দিন। তার জন্যে আজো কেঁদে কেঁদে দিন কাটাচ্ছেন মা লেবু বেগম। তিনি ভুলতে পারেন না, সেই দিনটির কথা। তার ছেলে গউস দুপুরের দিকে ঘরে আসে। খুব তাড়াহুড়ো করে খাওয়া-দাওয়া সারে। অভ্যাস মতো খাটে একটু শুতেই ফোন আসতে থাকে। মা বুঝতে পারেন ছেলে বার বার ফোন রিসিভ করছেন। এক পর্যায়ে ঘর থেকে বেরুচ্ছিলেন, মা সন্তানকে বললেন, চারদিকে গন্ডগোল হচ্ছে ঘরে থাকো বাবা, বাইরে যাওয়ার দরকার নেই। কথাটা বলতেই গউস মায়ের পায়ে ধরে সালাম করে বলে ‘মাই গো দোয়া করিও, দেশোর লাগি যাইয়ার’ মরলে শহিদ আর বাঁচলে গাজি। মা অবাক হয়ে যান, গউস সাধারণত ঈদের সময় পায়ে ধরে সালাম করে, তবুও সব সময়ের মতো বলেন, ‘যাওরে পুত আল্লাহর হাওলা।’ দিনটি ছিল ৪ আগস্ট ২০২৪।
গউস সেই যে ঘর ছেড়েছিল, আর ফিরে আসেনি, এসেছিল তার লাশ। সিলেটের গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের উত্তর ঘোষগাঁও গ্রামের মৃত মোবারক আলীর ছেলে গউস উদ্দিন। তিনি পেশায় সিএনজি অটোরিকসা চালক,৭/৮ বছর ধরে অটোরিকসা চালাচ্ছেন। বয়স তিরিশ। বিয়ে করেন নি। তারা ছয় ভাই এক বোন। গউস ভাইদের মধ্যে পঞ্চম।
গউস উদ্দিনের ভাই আবুল কালাম হাসপাতাল থেকে গউসের লাশ গ্রহণ করেছিলেন। বললেন, ৪ আগস্ট তখন গোলাপগঞ্জে ছাত্র-জনতার আন্দোলন তুঙ্গে। চারদিক থেকে মিছিল, হামলা-প্রতিরোধের খবর আসছিলো। বেলা চারটা সাড়ে চারটার দিকে তার কাছে ফোন করেন চাচাতো ভাই হাসান, জানান গউসের গায়ে গুলি লেগেছে গোলাপগঞ্জ চৌমুহনার সানরাইজ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে।
সূত্র- বাসস, শহিদ গউসের জন্যে আজো কাঁদেন তার মা (Archived)