বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের জন্ম হয় সত্তরের দশকের শেষভাগে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫% এসেছিল এই শিল্প থেকে যার পরিমাণ পঞ্চাশ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
মাল্টি-ফাইবার এগ্রিমেন্টের কোটার সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে গড়ে উঠেছিল এই শিল্প। এমএফএ নামে পরিচিত এই চুক্তি অনুসারে স্বল্পোন্নত দেশগুলো দেশগুলোর পণ্য যেন পশ্চিমের দেশগুলোতে সহজে প্রবেশাধিকার পায়, তাই কোন দেশ থেকে কী পরিমাণ পণ্য কোন দেশে রপ্তানি করা যাবে তা একটি কোটা ব্যবস্থার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হত। যেহেতু দক্ষিণ কোরিয়ার মত উন্নয়নশীল দেশগুলো নিজ দেশ থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি পোশাক রপ্তানি করতে পারতো না, তাই কোরীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বিকল্প দেশের খোঁজ করতে থাকে যেখান থেকে নিজেদের পণ্য তৈরি করে পশ্চিমের উন্নত দেশগুলোতে রপ্তানি করা যায়। এভাবেই কোরিয়ার দাইয়ু করপোরেশনের সাথে রাষ্ট্রপতি জিয়ার যোগাযোগ হয় এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এই শিল্প গড়ে ওঠে।
রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের জন্ম সত্তরের দশকের শেষভাগে হলেও, এই শিল্পের সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয় ১৯৯০’র দশকের প্রথম পাঁচ বছরে। ১৯৯১ সালে বেগম খালেদা জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী হন তখন দেশে মোট তৈরি পোশাক কারখানা ছিল ৮৩৪টি, ১৯৯৬ সালের মাঝামাঝি নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২,৩৫৩টিতে, অর্থাৎ এই শিল্পের কলেবর বাড়ে প্রায় তিনগুণ। এসময় এই খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রার আয়ও বাড়ে প্রায় সাড়ে তিনগুণ।
Bangladesh Institute of Development Studies ২০১৭ সালের মে মাসে প্রকাশিত তাদের Labour Market and Skill Gap in Bangladesh গবেষণা প্রতিবেদনে দেখায় ১৯৯০ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে এই খাতে প্রতি বছর গড়ে ২৯.০৭% হারে কর্মসংস্থান বেড়েছে। পরে ২০০০-এর দশকে এফএফএ’র মেয়াদ শেষ হলে কিছুটা কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধি কিছুটা স্তিমিত হলেও ২০০৬ থেকে ২০১০ সালে ১১.৫% হারে কর্মসংস্থান, প্রতি বছর। এরপর অবশ্য এই প্রবৃদ্ধির পতন হয়।