গণ–আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর বিকেলে বিজয় মিছিল নিয়ে দেবীদ্বার থানা ঘেরাওয়ের সময় পুলিশের গুলিতে আহত হন সাব্বির হোসেন (১৮)।

বাবাহারা সাব্বির ছিলেন সংসারের একমাত্র আশার আলো। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে মাসহ চারজনের সংসার চালাতেন। তাঁকে হারিয়ে পরিবারটি এখন দিশাহারা। ছেলের মৃত্যুর পর থেকে সাব্বিরের মা রীনা বেগমের কান্না থামছেই না। বিলাপ করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা রীনা বেগম। রীনা বেগম বলেন, ‘দুই বছর আগে স্বামীরে হারাইছি। বড় পোলা সাব্বিরের তখন এসএসসি পরীক্ষা দেওনের কথা আছিল। বাপ মারা যাওয়ায় পোলাডা আমার আর পরীক্ষা দেয় নাই। ছোড দুইডা ভাইবইন আর আমারে ভালো রাখার লাইগ্যা অটোরিকশা লইয়া রাস্তায় নামছে। তারা আমার পোলাডার মাথায় গুলি করছে। পোলাডা আমার ৪০টা দিন কষ্টে ছটফট করেছে।’

স্বজন ও এলাকাবাসী জানান, ৫ আগস্ট বিকেলে বিজয় মিছিল নিয়ে দেবীদ্বার থানা ঘেরাও করেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশ থানার ছাদে উঠে আন্দোলনকারীদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি করলে ১৫ থেকে ১৬ জন গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় সাব্বিরের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলি লাগে। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ‘সাব্বির আমাদের দলের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। দলীয় পদ-পদবি না থাকলেও আমাদের প্রতিটি প্রোগ্রামে অংশ নিতেন। আমাদের কাছে তাঁর ছবি আছে। তিনি ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে মাঠে ছিলেন। আমরা তাঁর হত্যার বিচার চাই। দলীয়ভাবে আমরা তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।’

সূত্র- প্রথম আলো, ‘পোলাডা আমার ৪০টা দিন কষ্টে ছটফট করেছে’ (Archived)

July Massacre