“বাসা থেইকা বাইর হওয়ার আগে ছেলে আমারে কয়, ‘মা, আমি যুদ্ধে যাইতেছি’। ছেলের কথা শুইনা শরীরে কেমন জানি কাঁপুনি উইঠা গেল। ছেলের হাতটা ধইরা কইলাম, ‘বাজান, আমার যদি দুইডা ছেলে থাকতো, তাইলে তোমারে আমি যাইতে দিতাম। একজন গেলে আরেকজন তো আমার বুকে ফিরা আইতো। আমার তো একটাই মাত্র পোলা, তোমারে যাইতে দিলে আমি কী নিয়া থাকুম, বাজান? তুমিই তো আমার একমাত্র ভরসা।’ আমি হাত ধরছি দেইখা পোলায় আমার মুখের দিকে তাকাইয়া কয়, ‘না মা, কোথাও যামু না, আমি ক্যান্টিনেই আছি।’ এই কথা কইয়া যে পোলা আমার বাহির হইলো, আর ফিরলো লাশ হইয়া,”— কান্না জড়ানো কণ্ঠে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের কাছে এভাবেই ছেলের সাথে নিজের শেষ মুহূর্তের স্মৃতিচারণ করছিলেন গত ৫ আগস্ট ঢাকার সাভারে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত মো. শ্রাবণ গাজীর মা শাহনাজ বেগম।
মো. শ্রাবণ গাজী (২০) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আশুলিয়ার গেরুয়া এলাকার মো. মান্নান গাজী ও শাহনাজ বেগম দম্পতির একমাত্র ছেলে। দুই ভাই-বোনের মধ্যে শ্রাবণ ছিল বড়। মালয়েশিয়ার টুঙ্কু আব্দুল রহমান ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করছিল শ্রাবণ। গত ১৬ই জুলাই দেশে আসে সে।
সূত্র- দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, ‘মা, আমি যুদ্ধে যাইতেছি’ (Archived)