বড় তিন বোনের বিয়ের পর বৃদ্ধ মা–বাবার একমাত্র অবলম্বন ছিলেন সুমন ইসলাম। বয়সের ভারে ন্যুব্জ দিনমজুর বাবা কাজ করতে পারতেন না। তাই দাখিল পাস করেই সুমন পাড়ি জমিয়েছিলেন ঢাকায়। কাজ নিয়েছিলেন ইপিজেডে। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন বিকেলে ঢাকার আশুলিয়া থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সুমন।
সুমন ইসলাম (২১) পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের আমিন নগর এলাকার হামিদ আলীর একমাত্র ছেলে। চার ভাইবোনের মধ্যে সুমন ছিলেন সবার ছোট। ২০২০ সালে স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে তিনি ঢাকায় পাড়ি দেন। সেখানে ইপিজেডে কাজ করার পাশাপাশি ২০২২ সালে তিনি আলিম পাস করেন। আশুলিয়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন সুমন। ৫ আগস্ট বিকেলে মিছিলে গিয়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। ৭ আগস্ট বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুমনের লাশ খুঁজে পান স্বজনেরা। পরদিন ৮ আগস্ট গ্রামের বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হয়।
ঘটনার দিন সুমনের সঙ্গে ছিলেন তাঁর প্রতিবেশী ভাতিজা সোলেমান ইসলাম (২০)। তাঁরা দুজন সহপাঠী ছিলেন। সোলেমান বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি কাজের সন্ধানে ঢাকায় যাই। সুমনের সঙ্গেই ছিলাম। আমরা ৪ তারিখেও (৪ আগস্ট) মিছিলে গেছিলাম। ৫ আগস্ট বিকেলে আশুলিয়া থানার সামনে একটি গাড়িতে অনেকগুলো লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার খবর ছড়ায়। তখন সবাই মিছিল নিয়ে এগোতে থাকে। সেই মিছিলে সুমন ও আমি ছিলাম। ওই মিছিলে গুলি করা হয়েছিল। আমার শরীরে রাবার বুলেট লাগে। পরে শুনি, সুমনেরও গুলি লেগেছে। ওর ফোন বন্ধ পাচ্ছিলাম। ৭ তারিখে (৭ আগস্ট) সুমনের লাশ ঢাকা মেডিকেলে পাওয়া যায়। সুমনের মাথায় ও কানের নিচে গুলি লেগেছিল।’
সূত্র- প্রথম আলো, সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে পারলেন না সুমন (Archived)